সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হঠাৎ একাধিক বিএনপি নেতার বিদেশ সফরের রহস্য কী

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০৪:৫১ অপরাহ্ন, ২৭শে আগস্ট ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

সরকার পতনের এক দফা দাবিতে চলমান যুগপৎ কর্মসূচির মধ্যেই বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ একাধিক শীর্ষ নেতার সিঙ্গাপুরসহ অন্যান্য দেশে যাওয়া নিয়ে রাজনীতির ভেতরে-বাইরে নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে। নিকট ভবিষ্যতে আরও কিছু নেতার বিদেশ যাওয়ার সম্ভবনা নিয়ে চলছে কানাঘুষা।

রোববার (২৭ আগস্ট) সকালে ঢাকা বিশ্বিবদ্যালয়ের পাশে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকীতে কবির সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, চিকিৎসার জন্য দলের বয়োজ্যেষ্ঠ নেতারা দেশের বাইরে গেছেন।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় যে, নীতিনির্ধারণী ফোরামের অন্তত পাঁচ জন সিনিয়র নেতা প্রায় একই সময়ে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। 

বিএনপির দায়িত্বশীল ও সিনিয়র একাধিক নেতা গণমাধ্যমকে জানান, শারীরিক অসুস্থতার কারণেই দেশের বাইরে রয়েছেন বিএনপির শীর্ষ স্থানীয় নেতারা। তবে কোনও কোনও নেতা  রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দেশের বাইরে থাকলেও পরিস্থিতির ইতিবাচক কোনও অগ্রগতি হয়নি।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান গণমাধ্যমকে জানান, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত ২৪ আগস্ট সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। তার সঙ্গে স্ত্রী ও কন্যা গেছেন। গত ২৭ জুন থেকে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিচ্ছেন স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি আগের চেয়ে অনেকটাই সুস্থ বলে জানান শায়রুল কবির।

এর আগে থেকেই থাইল্যান্ডে অবস্থান করছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। তিনিও চিকিৎসাজনিত কারণে বিদেশে অবস্থান বলে জানান দলের একজন নেতা।

চিকিৎসার জন্য দীর্ঘদিন ধরে দিল্লিতে অবস্থান করছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ। চলতি বছরের মার্চে ভারতের শিলং আদালত তাকে খালাস দিলে কিছুদিন পর তিনি দিল্লি যান। সেখানে তিনি স্ত্রীসহ অবস্থান করছেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির ১৪ সদস্যের মধ্যে ছয় জনই এখন দেশের বাইরে। শর্তসাপেক্ষ মুক্তিতে গুলশানের বাসায় অবস্থান করছেন খালেদা জিয়া, অসুস্থ অবস্থায় রয়েছেন ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার ও ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া। গত মে মাসে স্ত্রী নুর আকতারকে হারান জমির উদ্দিন। এরপর থেকে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে অনিয়মিত হয়ে পড়েন তিনি। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে টানা বিছানায় শয্যাশায়ী রফিকুল ইসলাম মিয়া। স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সেলিমা রহমান দলীয় কর্মসূচিতে সক্রিয় রয়েছেন।

এ বিষয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপির ঘরের মধ্যে এখন অন্তর্জ্বালা শুরু হয়েছে। পত্রিকায় দেখলাম, চট্টগ্রামে ছাত্রদল বিএনপি অফিসে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। কখন যে নয়া পল্টনের অফিসে যুবদল তালা লাগিয়ে দেয়, সেটি দেখার বিষয়। তাদের (বিএনপি) ঘরের মধ্যে এখন অন্তর্জ্বালা শুরু হয়েছে। নইলে ছাত্রদল বিএনপি অফিসে তালা লাগানোর কথা না। এই অন্তর্জ্বালা শুরু হওয়ার কারণ হচ্ছে বিদেশিদের কাছে বারবার ধর্না দিয়ে কোনও লাভ হয়নি। বিদেশিরা তাদের দাবি-দাওয়া, তথাকথিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নিরপেক্ষ সরকার এগুলোর প্রতি কোনও সমর্থন জানায়নি। বিদেশিরা শুধু একটি সুন্দর নির্বাচন দেখতে চায় বাংলাদেশে। আমরাও (আওয়ামী লীগ) একটি সুন্দর নির্বাচন করতে চাই।’

বিএনপির নির্বাচন বর্জন করার অধিকার আছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘নির্বাচন প্রতিহত করার চেষ্টা যদি কেউ করে, তাহলে দেশের মানুষ কঠোর হস্তে সেটি প্রতিহত করবে। এটি ২০১৪ সাল নয়, এটি ২০২৩ সাল। এখন ২০১৩-১৪ সালের পুনরাবৃত্তি করবেন, সেটি এই দেশের মানুষ করতে দেবে না।’

আর.এইচ/ আই.কে.জে/

বিএনপি

খবরটি শেয়ার করুন